কালো আগস্ট

কালো আগস্ট
যে ছবিটি দেখছেন তিনি বাংলা দেশ স্বপ্নে যারা বিভোর ছিলেন তাদের খুব কাছের মানুষ- ভালোবাসার মানুষ। আগস্ট মাস যেন সেই নামটির সাথে মাতোম করে। শেখ মুজিবুর রহমান আগস্ট না আসলে নিশ্চয় আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ সড়কের দাবী নিয়ে দাঁড়াবার প্রয়োজন বোধ করতো না। আগস্ট না আসলে নিশ্চয় আমরা একটা সমাজবাদী রাষ্ট্রের অভ্যুত্থান দেখতে পেতাম। বিনম্র শ্রদ্ধা প্রিয় মানুষ!!!

13 May 2015

বখতিয়ার-এর ঘোড়া (রিভাইজ)


বখতিয়ার-এর ঘোড়া (রিভাইজ), গ্রাফিক্স এন্ড পেইন্ট: এমএইচএস

‘বখতিয়ার-এর ঘোড়া (রিভাইজ)’ কবিতাটি বিদ্রোহী কৃষকের ‘নাছোড়বান্দা’ কবিতার পাণ্ডুলিপি থেকে নেয়া। কবি জানিয়েছেন, এই কবিতাটি কবি আল মাহমুদ-এর বখতিয়ারের ঘোড়া কবিতাটির প্রতিক্রিয়া। কবি মনে করেন, বখতিয়ারের ঘোড়ার রূপটা যুদ্ধবাজ ঘোড়ার নয়। বখতিয়ারের ঘোড়ার পিঠের আরোহী নিজেও জানতেন তিনি একটি আরোপিত শান্তির সুবাতাস দিতে এসেছেন। চলুন কবিতাটি নিয়ে কবির নিজের কথা এবং কবিতাটির অংশ-বিশেষ পাঠ করি। -সম্পাদক
                                                                                                                                                                                                  

“আমার যে বোধটি একটা সময় অন্ধকূপ অতিক্রম করতে পারছিল না তখন ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ আমাকে আশার আলোর দিকে টেনে নিয়ে যায়। সেদিন আমি আমার আত্মার সাথে যুদ্ধ করেছিলাম। 
বখতিয়ারের ঘোড়ার খুর আমার বুকের জমিন থেঁতলে দিয়ে যাচ্ছিল। আর ওই রাজসিক ঘোড়ার হ্রেষা আমার প্রতিটা স্পন্দন চাবকে দিচ্ছিল।
যেন- ওরে বেহায়া অতটা সময় পার করে বুঝলি তুই এখনও নিরেট গাধা!
হায়! আমি কি বখতিয়ারের ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করবার সাধ জাগিযেছিলাম!

মানুষ-এর বয়স বাড়ে। একদিন হয়তো এই মানুষেরই আর বয়স বাড়বে না। সুন্দর প্রাণোবন্ত শিশুটা স্রেফ শিশুই থেকে যাবে। তাকে সবাই আদরে আহ্লাদে আটখান করে তুলবে। কিন্তু, এখন? সকল বিকারগ্রস্তের স্বাক্ষীসদয় হয়েছি। বুড়োভামের চিন্তাটা যদি আমায় জাগায় মন্দ কি? যে অন্তত আমাকে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার স্বপ্ন দেখায়! আমি তাতে ডরি কি?

অথচ আমি চাইলাম ওই ঘোড়ার পিঠে করে অশোকের ধূসর জগতটাকে দেখে আসবো। সে দিন কে ছিল এই ভূখণ্ডে? কোন অবলার স্বপ্ন সে খুরের আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছিল সে কাহিনীটাও। আমার মন কোনও যুদ্ধ যুদ্ধ শব্দের ধ্বনি প্রতিধ্বনি শোনে না।

আমার হৃদয় কোনও জেহাদের জন্য জাগে না। আমার হাতে নাঙ্গা তলোযার খেলে না। আমার হৃদয়ে যে মক্কা মদীনার ধ্বনি; সেখানে সহস্র বছরের মানব জন্মের প্রেম-বিরহের গান।”
“সেদিন তুমি আর যা এনেছিলে
তার নাম আরোপিত বিশ্বাস
আরও একটা ভাইরাস।”
-বিদ্রোহী কৃষক

সুনসান নীরবতা।
অশোক-এর পাতা নীরবে কাঁপছিল।
মৃদু-ভূ কম্পনের লক্ষণ।
বাতাসে ভর করেছিল ভয়।
নারীরা সিঁদুর মুছে ফেলেছে।
পায়ের নকশা অ্যারাবিক কৌশল হয়ে গেছে ততক্ষণে।

বনে-জঙ্গলে পালিয়েছে হনুমানজি।

শস্য আর সূর্যী দেবী ছেড়ে গেছে পূজারী।
এমনটা আগে কখনও ঘটেনি।

সুঢৌল শরীর ঘোড়ার পিঠ ঠেসে দিয়েছে মাটিতে।

হে বখতিয়ারের ঘোড়া তুমি কি সু-সংবাদ এনেছো?
নাকি দানব দাঁত কেলাচ্ছে নাঙ্গা খঞ্জর হাতে?

নিরীহকে অধিগ্রহণ নেশায় মত্ত একটা দল।
যোনী পথ খুলে দাও; একটা অধ্যায় আবার
ভ্রুণ হয়ে ঢুকে গেছে জঠরে।

আসো শান্তির ছায়া তলে।
আসো, নিজে থেকেই হয়ে যাও।
ওই যে সিন্দুক। সেখানে রাখবো তোমায়।
তুমি গণিমতের মাল হয়ে যাও।

হে বখতিয়ারের ঘোড়া তুমি আর কি এনেছো?
এই বাংলা ভূখণ্ডে।

সেদিন তুমি আর যা এনেছিলে
তার নাম আরোপিত বিশ্বাস
আরও একটা ভাইরাস।


No comments:

Post a Comment