ভূমিকম্পের আঘাতে আর চেনা যাচ্ছে না নেপালের পরিচিত রূপ |
দি ইন্ডিপেনডেন্ট-এর হেড লাইনটা পড়ে চমকে উঠলাম।
বাস্তবতার সাথে পত্রিকার হেডিংয়ের কোনও মিল পাই নি বলেই চমকিত হচ্ছি।
ফলে বাধ্য হয়ে গুগল-এর সার্চ ওয়ার্ল্ডে ঢুকে গেলাম।
হ্যাঁ!
১০ টা অ্যাটম বোমার সমান আঘাতই করেছে নেপালের ভূমিকম্প।
ফলত ভূমিকম্পের ফলে পরবর্তী দুর্যোগের আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। নেপাল আর হিমালয় পর্বতের এভারেস্ট চূড়ার অবস্থান খুব কাছাকাছি। আবার বিশ্বের এই সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া তৈরিই হয়েছে দুটি বিশাল টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে। বিগত বছরগুলোতে দেশটির অনেকগুলো ভূমিকম্প প্রত্যক্ষ করার বিষয়টি ছিল স্বাভাবিক। এবারের ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
প্রথম সমস্যাটা হচ্ছে, ভূমিকম্পটির শক্তি। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পকে একজন বিশ্লেষক বর্ণনা করেছেন, ২০টি থার্মো-পারমাণবিক হাইড্রোজেন বোমার সঙ্গে, যার প্রতিটির ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষমতা জাপানের হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা বোমার চেয়ে অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল নেপালের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা কাঠমান্ডুর মাত্র ৪০ মাইল দূরে।
তা ছাড়া এত বেশি ক্ষয়ক্ষতির পেছনে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থলের গভীরতাও একটা বিষয় ছিল। এটি মাত্র ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার মাটির গভীরে উৎপত্তি হয়। এতে করে ঝাঁকুনি অনেক বেশি অনুভূত হয়েছে। অধিকতর বেশি গভীরতায় ভূমিকম্প হলে মাটি এর প্রচণ্ডতার অনেকটাই শুষে নিতে পারে।
ভূমিকম্পের পর সাধারণত বেশ কিছু পরাঘাত হয়ে থাকে। তবে সময়ের ব্যবধানে তার ক্ষমতা ও পুনরাবৃত্তি কমে যায়। নেপালের ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের আধা ঘণ্টার মাথায়ই ৬ দশমিক ৬ মাত্রার একটি এবং তার পরে আরও অন্তত ২০টি পরাঘাত হয়েছে। উদ্বেগের ব্যাপার হচ্ছে, পরাঘাতগুলোর মাত্রা কম হলেও তা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে উল্লেখযোগ্য হারে। কারণ, প্রথম আঘাতেই অনেক অবকাঠামো নড়বড়ে হয়ে পড়ে, যা পরে সামান্য আঘাতেই ধসে পড়তে পারে।
নেপাল বিশেষভাবে ভূমিকম্পপ্রবণ হওয়ার মূল কারণ এর অবস্থান। দেশটি যে দুটি বিশাল টেকটোনিক প্লেটের সন্ধিস্থলে অবস্থিত, যা প্রতিবছর এভারেস্ট এবং হিমালয়ের বাকি অংশকে ধাক্কা দিয়ে কয়েক মিলিমিটার উঁচু করে দিচ্ছে। দুটি প্লেট যখন একটি অপরটিকে বিপরীত দিকে ধাক্কা দেয়, তখন এটা থেকে চাপ ও শক্তি উৎপন্ন হয়। ভূত্বক আলাদা না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়াটা চলতেই থাকে। এ প্রক্রিয়ার ফলেই ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
সূত্র: উন্নয়ন সংবাদ
No comments:
Post a Comment