‘উন্নয়নের ইভেন্ট খুলতে খুলতে আমি এখন দালাল,
তার আর তাহাদের
যাহাদের উপর চন্দ্রবিন্দু অঁঙ্কিত করে সম্মান দিতে হয়
তাহাদের খাঁড়া খাঁড়া দেয়ালে খাঁড়ায়ে খাঁড়য়ে দুঃখগুলো
মুতের সাথে ত্যাগ করে বলি শালা পিসড্ অফ!’বখতিয়ার-এর ঘোড়া (রিভাইজ), গ্রাফিক্স এন্ড পেইন্ট: এমএইচএস
‘বখতিয়ার-এর ঘোড়া (রিভাইজ)’ কবিতাটি বিদ্রোহী কৃষকের ‘নাছোড়বান্দা’ কবিতার পাণ্ডুলিপি থেকে নেয়া। কবি জানিয়েছেন, এই কবিতাটি কবি আল মাহমুদ-এর বখতিয়ারের ঘোড়া কবিতাটির প্রতিক্রিয়া। কবি মনে করেন, বখতিয়ারের ঘোড়ার রূপটা যুদ্ধবাজ ঘোড়ার নয়। বখতিয়ারের ঘোড়ার পিঠের আরোহী নিজেও জানতেন তিনি একটি আরোপিত শান্তির সুবাতাস দিতে এসেছেন। চলুন কবিতাটি নিয়ে কবির নিজের কথা এবং কবিতাটির অংশ-বিশেষ পাঠ করি। -সম্পাদক
“আমার যে বোধটি একটা সময় অন্ধকূপ অতিক্রম করতে পারছিল না তখন ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ আমাকে আশার আলোর দিকে টেনে নিয়ে যায়। সেদিন আমি আমার আত্মার সাথে যুদ্ধ করেছিলাম। বখতিয়ারের ঘোড়ার খুর আমার বুকের জমিন থেঁতলে দিয়ে যাচ্ছিল। আর ওই রাজসিক ঘোড়ার হ্রেষা আমার প্রতিটা স্পন্দন চাবকে দিচ্ছিল।
যেন- ওরে বেহায়া অতটা সময় পার করে বুঝলি তুই এখনও নিরেট গাধা!
হায়! আমি কি বখতিয়ারের ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করবার সাধ জাগিযেছিলাম! মানুষ-এর বয়স বাড়ে। একদিন হয়তো এই মানুষেরই আর বয়স বাড়বে না। সুন্দর প্রাণোবন্ত শিশুটা স্রেফ শিশুই থেকে যাবে। তাকে সবাই আদরে আহ্লাদে আটখান করে তুলবে। কিন্তু, এখন? সকল বিকারগ্রস্তের স্বাক্ষীসদয় হয়েছি। বুড়োভামের চিন্তাটা যদি আমায় জাগায় মন্দ কি? যে অন্তত আমাকে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার স্বপ্ন দেখায়! আমি তাতে ডরি কি? অথচ আমি চাইলাম ওই ঘোড়ার পিঠে করে অশোকের ধূসর জগতটাকে দেখে আসবো। সে দিন কে ছিল এই ভূখণ্ডে? কোন অবলার স্বপ্ন সে খুরের আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়েছিল সে কাহিনীটাও। আমার মন কোনও যুদ্ধ যুদ্ধ শব্দের ধ্বনি প্রতিধ্বনি শোনে না। আমার হৃদয় কোনও জেহাদের জন্য জাগে না। আমার হাতে নাঙ্গা তলোযার খেলে না। আমার হৃদয়ে যে মক্কা মদীনার ধ্বনি; সেখানে সহস্র বছরের মানব জন্মের প্রেম-বিরহের গান।”
“সেদিন তুমি আর যা এনেছিলে
তার নাম আরোপিত বিশ্বাস আরও একটা ভাইরাস।”
-বিদ্রোহী কৃষক
|
মিলন মাযহার
সারি-সারি বলাকার উড়াউড়ি। সারবেঁধে দাঁড় করানো; বুলেটবিদ্ধ হবে যতো প্রাণ।
এমনও প্রাণ আছে- নিরেট চাইলেই দিয়ে দেবো! প্রাণগুলো নিভৃতে থাকে। উড়তে থাকে সাদা-শাদা বলাকার পাখনায় মিলে মিশে।
কবি- মিলন মাযহার, এমনই এক নিভৃতচারী কবি। নিজের মধ্যে তার কত-কিছুর বাস। সেই আবাস থেকে জন্মান্ধ কয়েকটা জ্বলজ্যান্ত প্রাণ নিয়ে এসেছে- ক্রসফায়ার দিবে, তাই! প্রাণগুলো’র চোখ বেঁধে রাখা। হাত-পা জোড়াতালি- নিভে গেছে প্রাণবায়ু উড়ে যাবার আগে। সে তো ওই বলাকা পিঠে। এখন মুক্তি কাল। বলছি কবি এখন তোমার আরও কয়েক জোড়া প্রাণের প্রসব বেদনায় কাটাবার কাল। -সম্পাদক
“মাটি; ওগো পায়ের তলার
মাটি, তুমি খাঁটি। সেই সে
খাঁটি কেমন করে যে বদলে
যাওয়া চোরাবালি ঘোর!”
- মিলন মাযহার
জন্মান্ধ প্রকাশিত কবি’র কবিতারা: কাঠুরিয়া, মাটি, জলভূমি-, সুপ্রিয় রাতসমূহ, উড়াউড়ি,
এমনও সন্ধ্যায় সান্ধ্যভাষার মিঠে আলাপন ভাল
|
দুই বাহু হয়ে উঠুক শক্ত ধাতুর পেটানো থাবা- জাগো শিশু জাগো |
এই নগরে লালবাগ কেল্লার আশে পাশে জনতা এই দুই শিশুকে প্রহার করে। কারণ খাবার চুরি--- ছবিটি ফোকাস বাংলার |
বিদ্রোহী কৃষক উইথ কফি এন্ড উইথ কফি কাপ থটস অনেক দিন পর ব্যাপক জ্বরের অবরোধে পড়েছি। জ্বরে কফি পান করতে ভাল্লাগছে। আমার বউ সেইরাম এক কাপ কফি বানায়ে দিল। কিন্তু চিনি দিতে ভুলে গেছে বোধহয়! তাকে বলেছি ব্যাপক ভালো বানাইছে। উল্টো বলেছি চিনিটা কি সুগার না সুগারফ্রি! আবোল-তাবোল শুইনা সে মাথায় জলপট্টি দেয়ার চিন্তা করলো। আমি বলল্লাম পানি গরম কইরা গামছা ধুয়ে আনো। শইলটা মুইছা ফেলি। কফি কাজে দিচ্ছে... |
সদা সংগ্রামী ও নন্দিত লেখক তসলিমা নাসরিন |