কালো আগস্ট

কালো আগস্ট
যে ছবিটি দেখছেন তিনি বাংলা দেশ স্বপ্নে যারা বিভোর ছিলেন তাদের খুব কাছের মানুষ- ভালোবাসার মানুষ। আগস্ট মাস যেন সেই নামটির সাথে মাতোম করে। শেখ মুজিবুর রহমান আগস্ট না আসলে নিশ্চয় আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ সড়কের দাবী নিয়ে দাঁড়াবার প্রয়োজন বোধ করতো না। আগস্ট না আসলে নিশ্চয় আমরা একটা সমাজবাদী রাষ্ট্রের অভ্যুত্থান দেখতে পেতাম। বিনম্র শ্রদ্ধা প্রিয় মানুষ!!!

25 January 2018

সমাজের দর্পণ, গণমাধ্যমকর্মী আর স্বপ্নের ওয়েজবোর্ড

সামনের কাতারের কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী এবং তৎবর্গীয় নেতারা ছাড়া ওয়েজবোর্ড নিয়ে কেউ কথা বলে- এমনটা আমার জানা নাই!
কিন্তু ওয়েজবোর্ডে ***একদিন সবাই বেতন পাবে এমন স্বপ্ন দেখে প্রত্যেক সংবাদকর্মী!

চাকরি থাকবার প্রত্যাশায় সবাই কিন্তু মুখে কুলুপ দিয়েই থাকে। নচেৎ একজন অন্তত আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন- এই যে এতো এতো সংবাদমাধ্যম তার কটি ওয়েজবোর্ড মেনে শ্রমিকদের বেতনভাতা দিয়ে থাকে ? অথচ দেখেন প্রত্যেক সংবাদমাধ্যমের মালিক এবং উদ্যোক্তারা কিন্তু দিন শেষে ভালোই থাকেন।
কারণ এটা খুব নিকট সত্য- আমাদের সংবাদমাধ্যমগুলো বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিংবা শিল্পমালিকের তদীয় ব্যক্তিবের্গর ঢাল হিসেবে কাজ করে।
সংবাদশ্রমিকের ক্ষুরধার লেখনি দিয়ে মালিকরা তাদের ক্ষমতা সুদৃঢ় করে- অনেক কিছু দাবিয়ে রাখে। তার ফিরিস্তি দেয়ার ইচ্ছা নাই। অনেকে হয়তো দ্বিমত করবেন, তাদের জন্য বলি- আপনি নিজে যে বৈষম্যের ভেতর দিয়ে চলেছেন, সেখানে কেন কোনো আওয়াজ তুলেন না ?

কিন্তু এই যে সত্য- সংবাদকর্মীর দিশেহারা জীবন, বাচ্চার দুধের টিন কিংবার জন্য হাহাকার বুৃকে নিয়ে সংবাদ লিখে চলা, মাস শেষে বাড়িওয়ালার সামনে দাঁড়াবার সাহস না থাকা, বাবা-মায়ের চিকিৎসা করাতে না পারা, নিজের দিকে একবারও ফিরে তাকাবার কথাটাই ভুলে যাওয়া সেই অসংখ্য সংবাদকর্মীর কষ্টটা কিন্তু তার একান্ত নিজের। সেটা কী আমাদের এলিট বনে যাওয়া গণমাধ্যম নেতা কিংবা সংবাদপত্রের সম্পাদক-মালিকরা রাখেন না ?

এমন অসংখ্য সংবাদকর্মী আছেন যারা আত্মসম্মানের ভয়ে নিজের অবস্থাটা বলেন না! এমন অসংখ্য সৎ সাংবাদিক আছেন যারা চুপ থাকেন।
এদের প্রত্যেকের প্রতিই তীব্র ঘৃণা জানাই- আপনার আত্মসম্মান ভয়টাই আসলে এই নৈরাজ্য এই বৈষম্যের কারণ, আপনাকে তীব্র ঘৃণা জানাই- আপনার সৎ হয়ে চুপ থাকাটাই কিন্তু মালিকের অসততার কারণ!
ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারকে আপনারা ঘিরে ধরছেন- কিন্তু বাস্তবায়নের নোটিস পাওয়ার পর কই আপনারা কেউ তো মালিকপক্ষকে ঘিরে ধরেন নাই!
আমাকে গণমাধ্যমের কোনো নেতা কী একটা সাফ জবাব দিতে পারেন- তাদের কাছে ওয়েজবোর্ডে বেতন প্রাপ্ত সংবাদকর্মী সঠিক সংখ্যা কতো- তার পরিসংখ্যান থাকবার কথা ?

৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন হতে চলেছে- হয়ে যাবে- খুবই সু-সংবাদ! সরকারি বেতন কাঠামোর প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার প্রামাণ্য চিত্রের মতোই কাছাকাছি একটা প্রামণ্য চিত্র নির্মাণ গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য। এটা আমাদের প্রত্যেক গণমাধ্যমকর্মীর জন্যই আশার কথা। কিন্তু এই আশার সংবাদ আমরা লিখলেও সেটা কেবল আশার লকারেই আটকে থাকবে। সরকার তার কাজটি হয়তো হয়তো করবে- কিন্তু যারা এই মূল-কাজটি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য থাকবেন তারা মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় ঠিকই ওই ওয়েজ প্রথাকে লকারে ঢুকিয়ে রাখবে।

তাই জানতে চাই আগের ওয়েজ প্রথায় এখন পর্যন্ত কতোজন গণমাধ্যমকর্মী বেতন পান- আসলেও পান কী না তার খোঁজ যতোদিন আমাদের গণমাধ্যম নেতারা না নিবেন- ততোদিন পর্যন্ত আসলে আমাদের নেতারা আপন স্বার্থেই লড়াই করবে বলে- আমি নিশ্চিত!

এটা কারো অজানা নয় যে, সাংবাদিকরা সবার বৈষম্যের কথা লিখে থাকেন। তারা সংবাদের পিছনে ছুটে বেড়ায় প্রায় ২৪ ঘণ্টাই। কর্মঘণ্টার কথা কখনোই তাদের মাথায় কাজ করে কিনা বলে সন্দেহ জাগে। অথচ আপনারা দেখবেন, যখন অন্যকোনো শিল্পের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি-দাওয়ার কথা গণমাধ্যমকর্মীরা লিখেন বা বলে থাকেন তখন ঠিকেই সেইসব শ্রমিকের কর্মঘণ্টার কথা উচ্চারিত হয়। অথচ নিজের কাজে কর্মঘণ্টার কথা কখনোই বলে না। অথচ সে অনুযায়ী সম্মানী পেয়ে থাকে নামমাত্র। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই ওভারটাইম দেয় না। হয়তো এতোবড় ত্যাগ করে থাকে বলেই সাংবাদিকতার নাম মহান পেশা।

এই যে সমাজের দর্পণ বলে আমরা বলে থাকি- সেই দর্পণের অন্তরালে কতো ঘাম কতো শ্রম কতো কষ্ট কতো বঞ্চনা কতো হাহাকার লুকিয়ে আছে- তা আমরা ক’জন খোঁজ রাখি!
খুব বেশিদিন আগের কথা না- একটা টেলিভিশন চ্যানেলের হেড অব নিউজ তার
জীবনের ঝুঁকি নিয়েও যখন সংবাদকর্মীরা সংবাদের সন্ধান করেন- সমাজকে পরিচ্ছন্ন রাখতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন- সেই শিল্পের ভেতরকার অপরিচ্ছন্ন দূর করাটা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি ডয়চে ভেলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন ভাতা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। যেখানে-


ওয়জে র্বোড মানে কারা

এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক বলেন, ওয়েজ র্বোড অনুযায়ী বেতন দেয়া বাধ্যতামূলক৷ তবে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই ওয়েজ র্বোড মানে না৷ হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান ওয়েজ র্বোড মেনে বেতন দেয়৷ যারা দেয়না তারা জোর করে সংবাদর্কমীদের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেয়, যে তাদরে ওয়েজ র্বোড অনুযায়ী বেতন দেয়া হয়৷ এই মুচলেকায় সই না করলে তাদের চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়।



এছাড়া সংবাদপত্র এবং সংবাদ সংস্থায় দেয়া বাধ্যতামূলক কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে৷ এটা না দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণরে সুযোগ আছে কিনা তাও নিশ্চিত নয়৷

ডয়চে ভলেরে প্রতবিদেন পড়তে এখানে ক্লকি করুন
- বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বেতন কত?

2 comments:

  1. কয়েকটি পত্রিকার কিছু সংবাদকর্মী একসঙ্গে হলেই কিছু একটা করা যায়। কিন্তু চাকরির ভয়ে কেউ এগিয়ে আসবে না- বা আসছে না।

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই সত্য আমরা কখনো বলতে পারি না। আসলে আমরা নতজানু হয়ে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি মনে হয়।

      Delete